
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এ ছাড়া করোনাভাইরাস প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় তথ্য ও পরামর্শ দেওয়ার জন্য হটলাইন চালু করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
জরুরী প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য আইইডিসিআর-এর নিম্নোক্ত হটলাইন নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য বলা হয়েছে। নম্বরগুলো হলো-০১৯৩৭১১০০১১, ০১৯৩৭০০০০১১, ০১৯২৭৭১১৭৮৪ ও ০১৯২৭৭১১৭৮৫। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
করোনাভাইরাসের স্বাস্থ্যবিষয়ক পরামর্শ সম্পর্কে এসব নম্বরে ফোন করলে জানা যাবে
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনা এক ধরনের সংক্রামক ভাইরাস। ভাইরাসটি পশু/পাখি হতে সংক্রমিত হয়ে থাকে। চীনসহ পৃথিবীর কয়েকটি দেশে বর্তমানে ২০১৯-nCoV (মার্স ও সার্স সমগোত্রীয় করোনা ভাইরাস) এর সংক্রমক দেখা যাচ্ছে। আপনি যদি এসব দেশ ভ্রমণ করে থাকেন এবং ফিরে আসার ১৪ দিনের মধ্যে জ্বর (১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট/৩৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড এর বেশি), গলা ব্যাথা, কাশি ও শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে আপনার দেহে ২০১৯-nCoV ভাইরাস সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে অতিসত্ত্বর সরকারী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যোগাযোগ করার জন্য এ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) তাদের এক বিবৃতিতে বিশ্বের সব দেশকে এ ব্যাপারে প্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।
২২ জানুয়ারি বুধবার চীনের স্বাস্থ্য কমিশন জানিয়েছে, নতুন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সেখানে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯ জনে দাঁড়িয়েছে। আক্রান্তদের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসা আরও দুই হাজার ১৯৭ জনকে শনাক্ত করার কথা নিশ্চিত করে ভাইরাসটি ‘হাঁচি, কাশির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে পারে’ বলে চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান লি বিন জানিয়েছেন।
চীনের বাইরে থাইল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়ায় ও তাইওয়ানে আরও চার জনের আক্রান্ত হওয়ার কথা দেশগুলোর কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে। নতুন এ ভাইরাসে তাদেরও একজন নাগরিক আক্রান্ত হয়েছে বলে মঙ্গলবার ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যে কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জারি রয়েছে সতর্কতা। ইতোমধ্যে বাংলাদেশেও জারি করা হয়েছে সতর্কতা। চীন থেকে আসা ফ্লাইটগুলোতে রাখা হচ্ছে বিশেষ নজর।
করোনা ভাইরাস কী?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে করোনা ভাইরাস সি-ফুডের সঙ্গে যুক্ত। করোনা ভাইরাস খুব তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়ে। উট, বিড়াল এবং বাদুড়সহ অনেক প্রাণীর শরীরেই এই ভাইরাস প্রবেশ করতে সক্ষম। আর এই সব প্রাণী থেকেই ওই বিরল ভাইরাসে মানুষও সংক্রামিত হতে পারে। তবে এই ভাইরাস এক মানুষ থেকে অন্য মানুষে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
যেভাবে ছড়ায়ঃ
বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত হয়েছেন যে, এ ভাইরাসটি একজন মানুষের দেহ থেকে আরেকজন মানুষের দেহে দ্রুত ছড়াতে পারে। করোনা ভাইরাস মানুষের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায় এবং শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমেই এটি একজনের দেহ থেকে আরেকজনের দেহে ছড়ায়। সাধারণত ফ্লু বা ঠাণ্ডা লাগার মতো করেই এ ভাইরাস ছড়ায় হাঁচি-কাশির মাধ্যমে।
করোনাভাইরাসের লক্ষণ?
ঠান্ডা, কাশি, গলা ব্যথা, শ্বাস নিতে অসুবিধা, জ্বর, এগুলিই ওই ভাইরাসের প্রাথমিক লক্ষণ। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের এর জেরে নিউমোনিয়া হতে পারে এবং এই ভাইরাস কিডনিরও ক্ষতি করে।
করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষার জন্য করণীয়ঃ
প্রথমত, এই ভাইরাসটি যেখানে ছড়াচ্ছে সেখানে যাওয়া এড়ানো উচিত। আর আপনি যদি একান্তই এমন জায়গার কাছাকাছি থাকেন তবে এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে আপনি নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলি অবলম্বন করতে পারেন …
১. আপনার হাত সাবান দিয়ে ভাল করে ধুয়ে নিন। যদি কোনও সাবান না থাকে তবে স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।
২. আপনার নাক এবং মুখ ভালভাবে ঢেকে রাখুন।
৩. অসুস্থ ব্যক্তিদের থেকে যতটা সম্ভব দূরত্ব বজায় রাখুন। তাঁদের ব্যবহৃত বাসন ব্যবহার করবেন না এবং তাঁদের স্পর্শ করবেন না। এর ফলে রোগী এবং আপনি দুজনেই সুরক্ষিত থাকবেন।
৪.ঘর পরিষ্কার রাখুন এবং বাইরে থেকে আসা জিনিসগুলিকেও পরিষ্কার করে ঘরে আনুন।
৫. নন-ভেজ বিশেষত সামুদ্রিক খাদ্য খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। কেননা এই ভাইরাস সি-ফুড থেকেই ছড়ায়।
করোনাভাইরাসের চিকিৎসাঃ
এখনও পর্যন্ত করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পেতে কোনও ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়নি। বিজ্ঞানীরা এই ভাইরাসের চিকিৎসার জন্য ভ্যাকসিন তৈরির জন্যে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
More Stories
বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন!৮ কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা
পদ্মা সেতু চালু হবে এ বছরের জুনেই
বাংলাদেশের পরিণতি শ্রীলংকার মতো হতে পারে ? জবাবে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী